Friday, October 17, 2025

সর্বাধিক পঠিত

আরও পড়ুন

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়?

ঢাকা, ১২ অক্টোবর ২০২৫: আধুনিক জীবনযাত্রায় কিডনির সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে, এবং এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত পানি পান এবং চাপপূর্ণ রুটিন। কিন্তু কিডনির সমস্যা শুরুর দিকে প্রায়শই লক্ষণগুলোকে অবহেলা করা হয়, যা পরবর্তীতে গুরুতর রোগে পরিণত হতে পারে। এই নিবন্ধে আমরা আলোচনা করব কিডনির সমস্যা হলে শরীরের কোন কোন অংশে ব্যথা অনুভূত হয়, সেইসাথে অন্যান্য লক্ষণ এবং প্রতিরোধের উপায়। এই তথ্যগুলো স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

কিডনি শরীরের পিছনের অংশে, পাঁজরের খাঁচার নিচে এবং মেরুদণ্ডের দুপাশে অবস্থিত। কিডনির সমস্যা হলে প্রধানত পিঠের উপরের অংশে ব্যথা হয়, যাকে ‘ফ্ল্যাঙ্ক পেইন’ বলা হয়। এই ব্যথা সাধারণত একপাশে বা উভয়পাশে অনুভূত হয় এবং এটি নড়াচড়ার সাথে পরিবর্তন হয় না। অনেক সময় এই ব্যথা পেটের উপরের অংশে, কোমরের দুপাশে বা এমনকি উরুর দিকে ছড়িয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, কিডনি স্টোনের ক্ষেত্রে ব্যথা তরঙ্গের মতো আসে এবং কুঁচকির এলাকায় পৌঁছে যায়।

কিডনির সমস্যা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, এবং ব্যথার স্থান ও তীব্রতা তার উপর নির্ভর করে। কিডনি ইনফেকশন (পাইলোনেফ্রাইটিস) হলে পিঠের পাশে তীব্র ব্যথা হয়, যা জ্বর, বমি বমি ভাব এবং বমির সাথে যুক্ত। কিডনি স্টোনের সময় ব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয় এবং পেটের নিচের দিকে বা যৌনাঙ্গের কাছে ছড়ায়। অন্যদিকে, ক্রনিক কিডনি ডিজিজে ব্যথা কম তীব্র হলেও দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং পায়ের ফোলাভাব বা মাংসপেশির টানের সাথে দেখা যায়। কোমরের ব্যথা প্রায়শই কিডনির সমস্যা বলে ভুল করা হয়, কিন্তু কিডনির ব্যথা মেরুদণ্ড থেকে একটু দূরে এবং উচ্চতর অবস্থানে হয়।

কিডনির সমস্যা শুধু ব্যথায় সীমাবদ্ধ নয়। প্রস্রাবে পরিবর্তন যেমন ফেনা হওয়া, লালচে রং বা রক্ত মেশানো হওয়া সাধারণ লক্ষণ। এছাড়া, শরীরে তরল জমে মুখ, হাত বা পায়ে ফোলাভাব হয়। ক্লান্তি, ক্ষুধাহীনতা, মাথা ঘোরা এবং মাংসপেশিতে টান লাগা কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার ইঙ্গিত। যদি এই লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

যদি ব্যথা তীব্র হয়, কয়েকদিন ধরে থাকে বা জ্বর, প্রস্রাবে রক্তের সাথে যুক্ত হয়, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তার দেখান। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে কিডনির সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং নিয়মিত চেকআপ করান। এই সতর্কতা আপনাকে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা করবে। স্বাস্থ্যই সম্পদ – সচেতন থাকুন!

সাম্প্রতিক