রাজধানীর ঢাকা কলেজে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে শিক্ষার্থীদের পদযাত্রার প্রস্তুতিকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষকদের দ্বারা কমনরুমে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে, যা পরে সহপাঠীদের প্রতিবাদের মুখে মুক্তি পায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, সোমবার (১৩ অক্টোবর ২০২৫) সকালে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ গঠনের দাবিতে পদযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মৌখিক বাক্যবিনিময়ের একপর্যায়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ রেজার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের ‘দালাল’ বলে সম্বোধনের অভিযোগ ওঠে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
এর জের ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে কয়েকজন শিক্ষক ফরহাদকে শিক্ষক কমনরুমে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা দ্রুত প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে এবং তাদের সহপাঠীকে মুক্ত করতে সক্ষম হন। এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়ালেও কলেজ প্রশাসন জানিয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত এবং নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ঘটনার পরও শিক্ষার্থীরা তাদের নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষা ভবনের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন। সকাল সোয়া ১১টার দিকে নীলক্ষেত হয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ভবন অভিমুখে রওনা দেন। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি জলকামান ও সাঁজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মূল দাবি হলো ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়ন। তারা জানিয়েছেন, সরকারের ঘোষিত এই বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়ায় কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বা রোডম্যাপ না থাকায় তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে দ্রুত খসড়া চূড়ান্ত করে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে।”
চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে একত্রিত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয়। এই কলেজগুলো হলো: ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত অধ্যাদেশ প্রণয়নের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
ঘটনার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কলেজ প্রশাসনের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তারা জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
