পটুয়াখালী, ১৫ অক্টোবর ২০২৫: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক সরকারের সমালোচনা এড়িয়ে ‘নাস্তানাবুদ’ করার প্রচেষ্টার কটু সমালোচনা করে বলেছেন, এতে নির্বাচনী পরিবেশে কালো মেঘ জমছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সকলের জন্য ‘শনির দশা’ অপেক্ষা করছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালী শহরের বড় চৌরাস্তার প্রধান সড়কে এক পথসভায় নুরুল হক এসব কথা বলেন। সভার পর তিনি নির্বাচনী এলাকা দশমিনা-গলাচিপারের দিকে যাত্রা শুরু করেন। তিনি বলেন, “সামনের জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিতে অনেক রাজনৈতিক দল গণসংযোগে নেমেছে। জনগণ উৎসবের মতো ভোট দিতে উদগ্রীব। কিন্তু এক দল সরকারকে দুর্বল করতে চাইছে, যা স্থান-কাল-পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে নির্বাচনের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখছি।”
নুরুল হক তাঁর উপর সাম্প্রতিক সংগঠিত হামলাকে ‘টেস্ট কেস’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এক রাজনৈতিক গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের লোভে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। “তারা পরীক্ষা করতে চেয়েছিল, বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো কতটা ঐক্যবদ্ধ। আমরা যখন এক হয়েছি, তখন তারা পিছু হটেছে,” বলেন ডাকসুরের সাবেক ভিপি। এই ঘটনা নির্বাচনী নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
নুরুল হক বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিভিন্ন দলের দাবিকে স্মরণ করিয়ে বলেন, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি সহ সকলে এটিকে ‘তাদের সরকার’ বলছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পতনের পর আশা নিয়ে গঠিত এই সরকারের শুরুর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া, কিন্তু এখন অনেকটাই ম্লান। কারণ, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং কিছু উপদেষ্টার ভূমিকা। “আমরা যে পরামর্শ দিই, তা এককভাবে আমল হয় না,” তিনি যোগ করেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা এবং জামায়াতের নায়েবে আমিরের অভিযোগ উল্লেখ করে নুরুল হক বলেন, কয়েক উপদেষ্টা নির্দিষ্ট দলের হয়ে কাজ করছেন এবং নির্বাচনী ছক তৈরিতে প্রশাসনে লোক বসাচ্ছেন। সরকার এসব আমলে না নিলে নিরপেক্ষতা হারিয়ে বিপদ বাড়বে। এই অভিযোগগুলো নির্বাচনী সুষ্ঠতা ও সরকারের নিরপেক্ষ ভাবমূর্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পথসভায় গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, রবিউল হাসান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, পটুয়াখালী জেলা আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং সদস্যসচিব মো. শাহ আলম সিকদারসহ অনেকে বক্তব্য দেন। তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ঐক্য ও সতর্কতার আহ্বান জানান।
এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মোড় নিয়ে আসছে। নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের পদক্ষেপ এখন সকলের দৃষ্টিপাতের কেন্দ্রবিন্দু। জাতীয় নির্বাচন ২০২৫-এর প্রস্তুতি, রাজনৈতিক ঐক্য এবং সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। আরও খবরের জন্য আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন।