মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় চারজন যুবকের অস্ত্র চালানোর অনুশীলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিওটি শ্রীনগর কলেজের আশপাশের এলাকায় তোলা বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। এই ঘটনা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ভিডিওটি গত মে মাসে রেকর্ড করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে চারজন যুবক একটি নির্জন স্থানে দাঁড়িয়ে অস্ত্র নিয়ে অনুশীলন করছেন। এরা ‘রাসেল-ফয়সাল বাহিনী’ নামক একটি সংগঠিত অপরাধী চক্রের সদস্য এবং শ্রীনগর এলাকার পরিচিত সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত। যুবকদের নাম ফয়সাল, রাসেল, অর্পণ এবং আহির, যাদের বয়স ২৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
ভিডিওটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১ মিনিট ৮ সেকেন্ড। এতে দুজন যুবকের হাতে পিস্তল দেখা যায়। একজন অস্ত্র দেখিয়ে বলেন, “এটা বেশ দামি, দুটো দিয়ে গুলি চালাব।” অন্যজন উত্তর দেন, “দুটো দিয়ে চালানো যাবে না, একটা দিয়ে করতে হবে। গুলি খুব দুর্লভ, সহজে পাওয়া যায় না।” আরেকজন ব্যাখ্যা করেন, “লক খুলে ট্রিগার চাপলেই গুলি বেরোবে।” এরপর একজন আকাশের দিকে অস্ত্র তাক করে গুলি চালানোর চেষ্টা করেন, যখন পাশের যুবক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
তদন্ত করে জানা গেছে, রাসেলের বাড়ি উপজেলার বাঘরা এলাকায়। ফয়সালের বাসস্থান কামারখোলায়। আহির, যিনি সাদা টি-শার্ট, কালো প্যান্ট এবং টুপি পরিহিত, তাঁর বাড়ি শ্রীনগর ইউনিয়নের মথুরা পাড়ায়। আর অর্পণ, যিনি কালো পাঞ্জাবি পরা, একই এলাকার বাসিন্দা। এই যুবকরা দীর্ঘদিন ধরে অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমূল হুদা একটি গণমাধ্যমকে জানান, ভিডিওটি শ্রীনগর কলেজের পেছনের পুকুরপাড় এলাকায় তোলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “বর্তমানে শ্রীনগরের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু পাঁচ মাস আগের এই ভিডিওটি ইচ্ছাকৃতভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি হয়।” ওসি আরও উল্লেখ করেন যে, ভিডিওতে দেখা যুবকদের পুলিশ ইতোমধ্যে শনাক্ত করেছে। এরা সকলেই সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত এবং থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা সকলে আত্মগোপনে রয়েছেন। বিশেষ করে রাসেলের দুটি চোখ প্রতিপক্ষের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
এই ঘটনা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের উদ্বেগজনক দিক তুলে ধরেছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্কতা বাড়িয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি এই যুবকদের সম্পর্কে তথ্য দিতে চান, তাহলে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।